Tuesday, July 26, 2016

সিলেটে আমাদের ওয়ান্ডেরার টিমের গ্র্যান্ড টুর

সিলেট যাওয়ার প্লান 
 টা বেশি দিনের নয় মানে হুট হাট করে চায়ের দোকান থেকে প্ল্যান ছিল যে আমরা কোথাও  ট্রিপে যাব,তবে শেষ পর্যন্ত যাচাই বাছাই করার পর আমরা এই সিলেট ট্রিপে বেরিয়ে পরি।


প্রথম দিনঃ
যেহেতু আমরা ঢাকা থেকে অনেক পথ পারি দিয়ে সিলেট আসছি সেহেতু অই দিন আর তেমন কোথাও যাই নাই তার মানে এই নয় আমরা হোটেল শুয়ে ছিলাম :) বিকালে সবাই ফ্রেশ হয়ে বের হলাম কাছে কোথাও গুড়ার জন্ন।আমাদের সাথে আবার  ইফতেকার ছিল সে আবার শাহাজালাল বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পরে মুন্নার কাজিন,সে আমাদের সাস্তে নিয়ে গেল,ঘণ্টা ২,১ ছিলাম ক্যাম্পাসে,গুরেছি শহীদ মিনার,সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন,কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন ইত্তাদি। ওখান থেকে আমারা সুজা হোটেল গুলশানে,কিছু ক্ষণ রেস্ট নিয়ে চলে গেলাম রাতের খাওয়ার জন্য পাঁচ ভাই হোটেলে,একমাত্র এই হোটেলটি মনে হয় সবছেয়ে শহরের মধ্যে বেস্ত।বসার জায়গা পাওয়া রীতিমত টাফ।যাই হক আমরা ১১ জন কোন রকমে রাতের খাবার শেস করে সোজা হোটেলে কোন কথা নাই,সবার ঘুম শুরু

২ই দিনঃ
২ই দিন আমরা খুব ভোরে বের হয়ে গেছি কথা ছিল অনেক জায়গায় জেতে হবে,রিতিমত আমরা হোটেলে সবাই ছাবি জমা দিয়ে বের হয়ে গেলাম সবার প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র নিয়ে। সকালে নাস্তার জন্য হোটেল পানসী তে গেলাম,নাম আছে আবার ওদের নাকি সকালের নাস্তা নাকি অনেক জোশ হয়। 
নাস্তা শেষে আমরা প্রথমে জাফ লং যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলাম কিন্তু আমাদের রিফাত সাহেবের গাইডলাইন অনুযায়ী আমরা সরাসরি জাফ্লং না যেয়ে লাল খাল হয়ে তামাবিল তার পর জাফ্লং যাই।
লালখাল 



লালাখাল
স্বচ্ছ নীল জল রাশি আর দুধারের অপরুপ সোন্দর্য, দীর্ঘ নৌ পথ ভ্রমনের সাধ যেকোন পর্যটকের কাছে এক দূর্লভ আর্কষণ। তেমনি এক নির্জন মনকাড়া স্থান লালাখাল। লালাখাল সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার কাছে অবস্থিত। 

সিলেট শহর হতে লালাখাল যাবার জন্য আপনাকে পাড়ি দিতে হবে মুটা মুটি ৩০ কি.মি রাস্তা। আপনি অনেক ভাবে লালাখাল যেতে পারেন। বাস, মাইক্রো, টেম্পু যোগে আপনি যেতে পারেন।

লালাখালে থাকার তেমন কোন সুবিধা নাই। সাধারনত পর্যটকরা সিলেট শহর হতে এসে আবার সিলেট শহরে হোটেলে রাত কাটায়। সাম্প্রতিক নাজিমগড় রিসোর্ট নামে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত পিকনিক স্পট গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে।
তামাবিলঃ

তামাবিল জিরো পয়েন্ট 




লাল খাল থেকে সুজা তামাবিল জিরো পয়েন্ট সেথান থেকে আমরা জাফ্লং যাই :) 

জাফলংঃ
খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি। পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তূপ জাফলংকে করেছে আকর্ষণীয়। এসব দৃশ্যপট দেখতে প্রতিদিনই দেশী-বিদেশী পর্যটকরা ছুটে আসে এখানে। 





ঘণ্টা খানিক ঠাণ্ডা পানিতে ভিজার পর আমরা রওনা দিলাম রাজার বাড়ির দিকে,বেশি দূরে নয়,রাজার বাড়ি থেকে বড় জোর ১ ঘণ্টা হবে।আমরা সবাই একটি বটবটি ৬০০ টাকা দিয়ে ঠিক করে প্রথমে চা বাগান পরে রাজার বাড়ি রাস্তা থেকে দেখে আবার ও  জাফ্লং চলে আসলাম।জাফ্লং থেকে আমারদের আগেই ভাড়া করা লেগুনা করে সিলেট মেইন শহরে চলে আশ্লাম।সবাই ক্লান্ত,তাই আমরা সবাই রীতিমত পাঁচ ভাই থেকে রাতের খাবারটা শেষ করে সবাই এক রোমে বসে মামুনুর রাশিদ শাওনের পাইচালি আর খঞ্জনা বাজিয়ে বাজিয়ে অর ফেসবুকের মজার মজার স্ট্যাটাস পরে সবাইকে বিনোদনের মাধ্যমে কেটে যায় আমাদের ২ই প্রথম দিন

৩ই দিনঃ
৩ই দিনে সবাই  রওনা দিলাম বিছনাকান্দির পথে,অন্যদিনের মত আমরা ভোর সকালে বেরিয়ে পরি বিছনাকান্দির পথে।সিলেট মাইন শহর থেকে সোজা গোয়াইগাঁট।এই খানে একটা সমস্যা হচ্ছে যে ছুটির দিনে বা বিশেষ দিনের নওকা পাওয়া অনেক কষ্ট ও বেয়বহুল।আর যাই হক ত্রিপে যেহেতু  বের হয়েছি সেহেতু একটু না হয় বেশি খরছ করলাম আরকি।যাই হক ১ ঘণ্টা জার্নি শেষে আমরা অবশেষে বিছনা কান্দি পোঁছলাম।


বিছনাকান্দি যাওয়ার পথে

বিছনাকান্দি যাওয়ার পথে

বিছনাকান্দি 


এইখানে আবার ঘণ্টা খানিক সবাই মজা মাস্তি করে পারি দিলাম বাংলাদেশের এক দুর্গম গ্রাম বাংলাদেশ – ভারত সীমান্তে মেঘালয় এর কোলে এক অসম্ভব সুন্দর গ্রাম – পান্থুমাই,কথা বললাম গ্রামবাসীর সাথে কিছুক্ষণ,সবাই পাথরের বেবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে।পান্থুমাই থেকে ওয়ানডারাজ টিম ফিরে চললাম হোটেল গুলশানে তখন সন্ধ্যা প্রায়।এইভাবে আমাদের ৩ই দিন শেষ হল 


কুলুমছরা গ্রাম

 কুলুমছরা গ্রাম,বিছনাকান্দি

৪র্থ দিনঃ
রীতিমত ৪র্থ দিন রওনা দিলাম রাতারগুলের দিকে।সকালে আমাদের রওনা দিতে একটু দেরি হয়েছিল কারন তার আগের দিন খুব বৃষ্টি হয়েছিল,তাই আমাদের রাতারগুল পোঁছাতে কিছুটা দেরি হয়েছে।যথারীতি সকালে হোটেল থেকে বের হয়ে সবাই নাস্তাটা সেরে নিলাম।সিলেট মেইন শহর থেকে একটা লেগুনা ভাড়া করে চলে যাই সোজা রাতারগুলের ঘাটে। আমরা ১১ জনের জন্য ৩টা নৌকা ভাড়া নিলাম,উদ্দেশ্য পুরা রাতারগুল গুড়ে দেখা পথিমধ্যে আমাদের জাওরামি ছিল অন্য লেভেলে,মুন্নার আর দুদরাজের হাওমাও বিনোদনের অন্যজায়।নিয়ামক  বলা যায়।
রাতারগুল

 রাতারগুল 

রাতারগুল থেকে আমরা পরে মানে দুপুরের দিকে লাক্কাতুরা চা বাগান যাই।সেখানে কিছুটা সময় পার করে চলে আসি হোটেলে।
 লাক্কাতুরা চা বাগান


সাথে রাসেল


   আমার সাথে শামিম উসমান 
                                                         
যেহেতু আমাদের আগামিকাল শ্রীমঙ্গলে মুভ করতে হবে সেহেতু আজি আমাদের শেষ দিন মেইন সিলেটে।কিন্তু যেতে হবে আমাদের শাহাজালাল এবং শাহাপরান মাজারে।সো আমি,নাফিজ,যাত্রাবাড়ী সাওন আর দ্রুব রওনা দিলাম মাজারে।মাজারে কিছুটা সময় ধর্মীয় কাজ শেষে  আমরা রাত ১০ টায় আবার হোটেলের উদ্দেশে রওনা দিলাম।

পরের দিন সকালে আমরা শ্রীমঙ্গলের দিকে যাত্রা শুরু করলাম।কদমতলি থেকে বাসে করে শ্রীমঙ্গলে  পৌঁছলাম।শ্রীমঙ্গলে তেমন কোন ভাল হোটেল না থাকলেও কম দামে আনারশ,লেবু পাওয়া যায়। যাবতীয় কাজ শেষে বিকালে মাদবকুণ্ড লেকে যাই।সেই সুজুগে বিভিন্ন স্বাদের চা।
মাধবকুণ্ডের লেক

নাফিজ আর জুনাইদ 

 লাওউাছড়া বন 

এই ছিল আমাদের সিলেট ভ্রমন।স্রিতির পাতার সরণী ও হয়ে থাকবে আমাদের এই বন্ধুত্বের আয়োজন ।
                                                                       হ্যাপি ত্রাভেলিং

0 comments: